একটা নতুন সকালের সূচনা হলো। আপনার গৃহে একটি নবজাতকের আগমনে আনন্দের সীমা নেই, কিন্তু তার সাথে সাথেই আসছে বহু দায়িত্ব ও কর্তব্য। গর্ভ থেকে জন্মের পর শিশুর সাথে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হলো নাড়ি বা "আম্বিলিক্যাল কর্ড"। এটি শিশুর এবং মায়ের মধ্যে পুষ্টি বিনিময়ের প্রধান মাধ্যম। কিন্তু জন্মের পরে এটি আর প্রয়োজন হয় না এবং একে কেটে ফেলা হয়। এরপর থেকেই এর সঠিক যত্ন নিতে হবে।
প্রথম কথা, নবজাতকের নাড়ির যত্ন নেওয়ার জন্য জানা দরকার কীভাবে এটি পরিষ্কার রাখা যাবে। প্রথমে মনে রাখতে হবে, নাড়ির অবশিষ্টাংশ চামড়ার সাথে জড়িয়ে থাকে। এটি চামড়ার সাথে পানির সংস্পর্শে না আসা সবচেয়ে ভালো। শিশুর নাড়ি পরিষ্কার রাখা খুবই জরুরি যাতে নাড়ি শুকানোর পদ্ধতি দ্রুত এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়।
নভশিশুর জন্য স্পঞ্জ বাথ নবজাতক কৌশলটি অধিক কার্যকরী। এর মাধ্যমে পুরো শরীর ভিজানো ছাড়া স্পঞ্জ ব্যবহার করে শিশু পরিষ্কার করা যায়। নাড়ি ভেজানো এড়িয়ে চলুন এবং স্থানটি সযত্নে শুকিয়ে নিন।
শিশুর নাড়ির যত্নে ডায়াপারের সঠিক ব্যবহার একান্ত প্রয়োজনীয়। নবজাতকের ডায়াপারের সঠিক ব্যবহার না করলে নাড়ির স্থানটি ঢেকে যেতে পারে যা সুস্থ শুকানোর প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে। ডায়াপার পরানোর সময় নিশ্চিত করুন যে এটি নাড়ির নিচে থাকছে এবং স্থানটি একটু অক্সিজেন পায়।
সম্ভাব্য শিশুর নাড়ি সংক্রমণ এড়াতে চেষ্টা করুন। নাড়ি সংক্রমণের লক্ষণ হিসাবে শক্ত, লালিচ্ছন্ন, বা পুঁজ আসতে পারে। যদি আপনি এই লক্ষণগুলো দেখেন তাহলে শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করবেন।
নাড়িতে উত্তেজনা এড়ানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোনো ধরনের টান, চাপ, বা শিশুর নাড়ির প্রাথমিক পতনে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করবেন না। প্রাকৃতিকভাবে নাড়ি পড়ালে রক্তপাত হতে পারে, যা সাধারণত সামান্য হয়। কিন্তু, অতিরিক্ত রক্তপাত ঘটলে তা সতর্ক সংকেত হিসেবে নিন।
নাড়ি পড়ানোর প্রাকৃতিক পদ্ধতি শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য সর্বোত্তম। এটি স্বাভাবিকভাবে শুকিয়ে গেলে এবং পড়ে গেলেই সন্তুষ্ট থাকুন। শিশুর জন্মের পর পরিচর্যা শুধু নাড়ির যত্নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; নবজাতক জনিত পরামর্শ অনুসারে প্রতিটি পর্যবেক্ষণ এবং নবজাতকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অতিরিক্ত যত্নের অন্তর্ভুক্ত।
শিশুর জন্মের পর নাড়ি এবং শিশুর স্নান পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতন থাকা আপনার দায়িত্ব। শিশুর নাড়ির প্রাথমিক পতনের পরাক্রমে কিছুটাও অসুবিধা দেখা দিলে তা শিশুর নাড়িতে ব্যথার লক্ষণ হিসেবে মনে করার পরিবর্তে ডাক্তারি সহায়তা নিন।
নবজাতকের চিকিৎসা সহায়তার ক্ষেত্রেও খেয়াল রাখতে হবে। আপনার শিশুর নিরবিচ্ছিন্ন সুস্থতার জন্য শিশুর পরালিখা এবং নবজাতকের পোশাকের যত্ন নিন। নবজাতকের ডায়াপার পরিবর্তন করার সময় নাড়ির স্থানের দিকে বিশেষ নজর দিন যাতে এটি শুকিয়ে যায় এবং কোনো সংক্রমণ না ঘটে।
জন্মের প্রথম কিছু দিনে শিশুর প্রয়োজনীয় যত্ন, নাড়ির সঠিক যত্ন এবং নিরলস পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করতে ভুলবেন না। এটি তাকে স্বাস্থ্যকর ও সুস্থ জীবনের পথ প্রদর্শন করতে সহায়ক হবে।